ব্রোকলির জাত পরিচিতি:ব্রোকলি আমাদের দেশে নতুন সবজি। কাজেই এখন পর্যন্ত তেমন কোন ভাল জাত আমাদের দেশে নেই। উন্নত বিশ্বের বেশ কয়েকটি জাত যেমন- প্রিমিয়াম ক্রস, গ্রীন কমেট, জুপিটার প্রভৃতি জাতের ব্রোকলি চাষ করা যায়। লালতীর সীডস লিমিটেড ‘লিডিয়া’ নামে ব্রোকলির একটি জাত বাজারজাত করছে, যা আমাদের দেশের আবহাওয়া উপযোগী। জাতটি দ্রুত বর্ধনশীল, মাঝারি আকৃতির, তাপ সহিষ্ণু ও রোগ প্রতিরোধী, দেখতে আকর্ষণীয় ও খেতে সুস্বাদু।
ব্রোকলির বপন/রোপণ প্রযুক্তি
বীজ বপন: আমাদের দেশের আবহাওয়ায় ব্রোকলি চাষের উত্তম সময় হল আশ্বিন থেকে পৌষ মাস।
বীজ হারঃচারা রোপণের আগে বিঘাপ্রতি (৩৩ শতক) প্রায় ৫০ গ্রাম বীজ বপন করে বীজতলায় চারা তৈরি করতে হবে। এরপর মূল জমিতে চাষের জন্য বিঘাপ্রতি ৬ হাজার চারা রোপণ করতে হবে।
রোপণ দূরত্বঃপ্রায় ৪ থেকে ৫ সপ্তাহ বয়সের চারা সারি থেকে সারি ২২ ইঞ্চি ও চারা থেকে চারা ১.৫ ফুট দূরত্বে রোপণ করলে ভাল ফল পাওয়া যায়। পাশাপাশি দুটি বেডের মাঝে ১ ফুট চওড়া এবং ৬ ইঞ্চি গভীর নালা রাখতে হবে।
ব্রোকলি চাষে সার ব্যবস্থাপনা:
ব্রোকলির ভাল ফলন পাওয়ার জন্য প্রতি শতাংশ (ডেসিমাল) জমির জন্য নিম্নোক্ত হারে সার প্রয়োগ করতে হবেঃ
সারের নাম | সারের পরিমাণ | মন্তব্য |
পচা গোবর/কম্পোস্ট | ৬০ কেজি | এছাড়াও ৭৬০ গ্রাম খৈল প্রয়োগ করা যেতে পারে |
টিএসপি | ০.৭৬ কেজি | _ |
ইউরিয়া | ০.৪৫ কেজি | _ |
এমওপি/পটাশ | ০.৬১ কেজি | _ |
জিপসাম | ০.৩২-০.৪ কেজি | _ |
দস্তা সার | ০.০৫ কেজি | _ |
বোরণ | ০.০৪ কেজি | _ |
ম্যাগনেশিয়াম অক্সাইড | _ |
প্রয়োগ পদ্ধতিঃ
উপরোক্ত সার মূল জমি তৈরির সময় প্রয়োগ করতে হবে। বিঘাপ্রতি ২ কেজি হারে রুটোন বা অন্য কোন শিকড় বর্ধনকারী হরমোন প্রয়োগ করতে হবে। জমি তৈরির সময় জিংক ও বোরন না প্রয়োগ করে চারা লাগানোর ২০ থেকে ২৫ দিন পর প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১০ গ্রাম লিবরেল জিংক ও ২০ গ্রাম লিবরেল বোরন একত্রে মিশিয়ে সপ্রে করা যায়। তবে রাসায়নিক সারের পরিবর্তে জৈব সার ব্যবহার করা উত্তম।
ব্রোকলি সংগ্রহ ও পরবর্তী করণীয়
ফসল সংগ্রহঃ
চারা রোপণের দুই মাসের মধ্যে ব্রোকলির অগ্রীয় প্রোপুষ্প মঞ্জুরী খাওয়ার জন্য সংগ্রহ করা যায়। তবে সঠিকমানের জৈব হরমোন ব্যবহার করলে প্রায় ১০ দিন আগে ফসল সংগ্রহ করা যায়। প্রায় তিন ইঞ্চি কাণ্ডসহ ধারালো ছুরি দিয়ে ফুল কেটে সংগ্রহ করতে হয়। এর ১০ থেকে ১২ দিন পর পর্যায়ক্রমে বোঁটাসহ কক্ষীয় প্রোপুষ্পমঞ্জুরী সংগ্রহ করতে হয়।
ফলন:
সঠিক পরিচর্যা করলে বিঘাপ্রতি ৫০-৬৫ মণ ফলন পাওয়া যায়।
Leave a Reply